মো: আল আমিন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ জেলায় পশু মোটাতাজাকরণে চলছে বিপ্লব। খামারে খামারে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৯টি গবাদিপশু যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, গত বছর কিশোরগঞ্জে কোরবানির পশু প্রস্তুতের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার। এবার তা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। জেলার প্রায় ২৩ হাজার খামারে পশু মোটাতাজাকরণ চলছে পুরোদমে। প্রস্তুত পশুর মধ্যে রয়েছে ৭০ হাজার ৭১টি ষাড়, ৪ হাজার ৬টি বলদ, ১৮ হাজার ৫৫৯টি গাভী, ১ হাজার ২৮৮টি মহিষ, ১ লাখ ১৩ হাজার ৮৯৬টি ছাগল, ৫ হাজার ৫১৬টি ভেড়া, ও ৩৩টি দুম্বা।
চাহিদা অনুযায়ী এবছর জেলায় প্রয়োজন ১ লাখ ৮০ হাজার ৯১১টি পশু। ফলে ৩২ হাজার ৪৫৮টি পশু অতিরিক্ত থাকবে, যেগুলো দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হবে।
করিমগঞ্জ উপজেলার সিদলার পাড় গ্রামের ইয়াসিন এগ্রো ফার্মের মালিক সুমন মিয়া বলেন, “আমার খামারে এ বছর অনেক গরু দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করেছি। গো-খাদ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় গরুর দামও তুলনামূলকভাবে বেশি রাখতে হচ্ছে। এক লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু রয়েছে আমাদের খামারে।”
সদর উপজেলার খামারি খোকন মিয়া জানান, তাঁর খামারে ২২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি কোরবানির হাটে তুলবেন। তিনি বলেন, “গত বছর করোনা ও অন্যান্য কারণে ৯ হাজারেরও বেশি পশু অবিক্রিত ছিল। এবার সেই সমস্যা নেই, তাই ভালো দামের প্রত্যাশা করছি।”
সরাসরি খামার থেকেই পশু কেনার ঝোঁক:
পশুর হাটে অতিরিক্ত খরচ ও অসুস্থ পশুর ঝুঁকির কারণে অনেক ক্রেতাই এবার সরাসরি খামার থেকে পশু কিনছেন। ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, “হাটে গেলে এক লাখ টাকার গরুর জন্য পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত হাসিল দিতে হয়। খামার থেকে কিনলে সেটা দিতে হয় না, বরং সুস্থ ও সবল গরু পছন্দমতো নিতে পারছি।”
দেশজুড়ে চাহিদা কিশোরগঞ্জের পশুর:
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র পন্ডিত বলেন, “এখানকার খামারিরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে—ঘাস, খৈল, ভুসি ইত্যাদি খাইয়ে পশু মোটাতাজা করেন। ফলে এখানকার পশুর দেশজুড়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাজার ভালো থাকলে এবার কিশোরগঞ্জ জেলায় হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।”
গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন গতি:
জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন শুধু দুধ উৎপাদন নয়, বছরজুড়েই উন্নত জাতের গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া পালন করে মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে আয় করছেন খামারিরা। এতে করে নতুন করে গড়ে উঠেছে অনেক বাণিজ্যিক খামার।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পশু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।