ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আলাইপুর গ্রামে বসবাসরত ৩৫ ঘর সংখ্যালঘু পরিবারকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তারা প্রতিকার চেয়ে গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও পার্শ্ববতী আলুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান দাস পাড়ায় রাতের আধারে ইচ্ছামফিক প্রবেশ করে বসবাসরত নারী ও গৃহবধূদের তার সঙ্গে রাত কাটাতে বাধ্য করেন। অনেক সময় মহিলাদের ভয় দেখিয়েও তাদের ব্যবহার করেন। কোন প্রতিবাদ করলে মারপিট করা হয়। এভাবে বেশ কিছু ঘটনা ঘটলেও প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি দাস সপ্রদায়ের লোকেরা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আলাইপুর গ্রামের অমরেশ কুমারের স্ত্রী অনিতা রানীকে বিভিন্ন সময় সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিজানুর রহমান ব্যবহার করে আসছেন। স্বামী হয়ে প্রতিবাদ করতে পারে না অমরেশ। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হলে স্ত্রী অনিতা বাপের বাড়ি চলে যায়। এদিকে মিজানুর রহমান তাকে বাপের বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনতে আমরেশকে চাপ দিতে থাকেন। রাজি না হওয়ায় গত ২৫ আগস্ট রাতে অমরেশকে গ্রামের কলীতলায় নিয়ে এবং গলায় অস্ত্র ধরে হত্যার হুমকি দিয়ে বলে স্ত্রী অনিতাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবি অন্যথায় লাশ হয়ে যাবি। এই অবস্থায় মিজানুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে অনিমেশ কুমার সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এ অবস্থায় নারীদের ইজ্জত সম্মান নিয়ে দাস পাড়ায় বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়। রাত হলেই অজানা ভয় আর আতঙ্ক শুরু হয়। দিনের বেলায় মিজানুরের লোলুপ দৃষ্টি থেকে যুবতী মেয়েদের আর অল্পবয়সের গৃহবধূদের আড়াল করে রাখতে হয়।
আলাইপুর গ্রামের দেবেন দাস জানান, রাত হলে দাসপাড়ার একটি দোকানে তাস খেলা শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন অসামাজিক কাজকর্ম শুরু হতে থাকে। এখানে বসবাস করার মতো পরিবেশ নেই। মিজানুর রহমানের ভয়ে আমরা কথা বলতে পারি না। আমাদের যে কী হবে উপর আল্লাহ জানে। আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই।
বুলু রানী দাস নামে এক নারী বলেন, মিজানুরের ভয়ে আমরা কোন রকম কথা বলতে পারিনা। তার ভয়ে কোনকিছু স্বীকার করতেও পারিনা। মিজানুরের বিরুদ্ধে কথা বললে আমাদের বিটাদের (পুরুষ) তুলে নিয়ে যাবে। তারা রাতে কাজ করে বাড়িতে আসে। এসব ভয়ে আমাদের খাওয়া-ঘুম কিছু নেই।
আলাইপুর গ্রামের বৃদ্ধা গিরিবালা দাস বলেন, তার ছেলেকে বিভিন্ন সময় মারধর করেছে মিজানুর। ঠেকাতে গিয়ে আমাকেও মারধর করেছে।
বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বিভিন্ন সময় বিচার-আচার করতে হয়। এই বিচারে হয়তো কোন পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে এই মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। তাই আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম জানান, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে তিনি দাসপাড়ায় গিয়েছেন এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন জানান, মঙ্গলবার একটি অভিযোগপত্র তিনি পেয়েছেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেও জানান।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।