জাতীয়করণের ঘোষণা না এলে কঠোর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত

মো. ইব্রাহিম খলিলঃ

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট।

আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. তারিখের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না এলে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. তারিখ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ ।

আজ (২৬ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে জোটের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দিন বলেন, 'স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ আর্থিকভাবে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। যদিও পাঠ্যক্রম, কর্মঘণ্টা, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হলেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণের মধ্যে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য বিরাজমান। বৈষম্যগুলো হলো- বাড়ি ভাড়া, উৎসবভাতা, চিকিৎসা ভাতা, পদোন্নতি না থাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা, হাউজ লোন, বদলি প্রথা, চাকরি শেষে পেনশন সুবিধা না থাকা। তাছাড়া অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে শিক্ষক-কর্মচারিগণের নিকট থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০% করে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই। অনেক শিক্ষক-কর্মচারী অবসরকালীন টাকা না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন। তাদের জন্য বদলী ব্যবস্থা চালু অতীব জরুরি। অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ৫শ' টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং একজন শিক্ষক মূল বেতনের ২৫% উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন। বিশ্বের কোনো দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন বৈষম্য আছে বলে মনে হয় না। এই বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ জরুরি। এসময় তিনি গণমাধ্যম কর্মীদেরকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বিরাজমান বৈষম্যগুলো তাদের লেখনীর মাধ্যমে সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জোটের সদস্য সচিব ও বাশিস মহাসচিব মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, "শুধু প্রাতিষ্ঠানিক আয় থেকেই কোনো ভর্তুকি ব্যতিরেকেই জাতীয়করণ সম্ভব। তাই প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারের কোষাগারে জমা নিয়ে জাতীয়করণ ঘোষণা এখন সময়ের দাবি। এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য দুরীকরণে আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারের উচ্চ মহলে যোগাযোগ করে আসছি । বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের কোনো কোনো মহল থেকে আশ্বাস পেলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি। তিনি শিক্ষক-কর্মচারিগণকে সংগঠিত হওয়ারও আহ্বান জানান। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. তারিখের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না এলে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. তারিখ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা দেন ।

জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ বেসরকারি মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম এর সভাপতি অধ্যক্ষ মওলানা দেলাওয়ার হোসেন আজিজী ও মতিউর রহমান দুলালের উপস্থাপনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোঃ ইদ্রিস আলী,সমন্বয়কারী মোঃ রফিকুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, আবু রায়হান, জহিরুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার, অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান আবিদ, তালুকদার আব্দুল মন্নাফ, জসিম উদ্দিন শেখ, শাহিদুল ইসলাম, বেনী মাধব দেবনাথ, রতন কুমার দেবনাথ, মো. শাহ আলম, মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. আফজালুর রশিদ, মো. মামুনুর রশিদ, মেজবাউল ইসলাম প্রিন্স, আবুল বাশার, মওলানা আহাদুল ইসলাম, , মোস্তফা কামাল প্রমুখ।