রফিকুল ইসলাম : কুষ্টিয়ার ইবি থানাধীন আব্দালপুর ইউনিয়নের চৌড়পাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম (৪৪) নামের এক ভণ্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে কবিরাজি চিকিৎসার নামে এক নববধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ০৪/০১/২০২১ ইং তারিখ রাত ৮ টার দিকে কুষ্টিয়া ইবি থানাধীন ১১ নং আব্দালপুর ইউনিয়নের চৌড়পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। সিরাজুল ইসলাম ১১ নং আব্দালপুর ইউনিয়নের চৌড়পাড়ার মৃত আজিবর ব্যাঙের ছেলে।

জানা গেছে, গত ৫ মাস পূর্বে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু থানার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামের লিজা (ছদ্মনাম) (১৬) বছর বয়সী এক কিশোরীর বিয়ে হয় একই থানার শিমুল নামে এক যুবকের সাথে। বিয়ের পরদিন থেকেই ওই নববধূর নানা মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সেই মানসিক সমস্যা সমাধানে ভৌতিক কারণ দেখিয়ে নববধূকে তার বোন বিপাশার শ্বশুর বাড়ির পাশে ওই ভণ্ড কবিরাজ সিরাজুল ইসলাম এর কাছে ঝাড়ফুঁক করানোর জন্য নিয়ে যান। ঝাড়ফুঁকের নামে একটানা ১৪ দিন এশার নামাজের পর একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে সেটি না নেভা পর্যন্ত তাকে তার বিশেষ চিকিৎসা গৃহে ঝাড়ফুঁকের নামে শ্লীলতাহানি করে আসছে। অবশেষে গত ০৪/০১/২০২১ ইং তারিখ রাত ৮ টায় তার বোন বিপাকে বাসা থেকে লবণ পড়া আনতে পাঠিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ওই নববধূকে। ঘটনার আধাঘন্টা পর তার বোন লবণ পড়া নিয়ে ফিরে আসলে ওই নববধূকে কান্নারত অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে তার বোন কান্নার কারণ জানতে চাইলে তাকে কোনো কিছু না বলে তার সাথে বাড়িতে চলে আসেন এবং রাতে কান্নায় ভেঙে পড়লে তখন ওই কিশোরী তার বোনকে বিষয়টি খুলে বলেন।এই ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে বললে তার বোনের ছোট্ট শিশুকে তার কবিরাজির মাধ্যমে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দেয় ওই ভণ্ড কবিরাজ সিরাজুল। বিষয়টি রাতারাতি ছড়িয়ে পড়লে আত্মরক্ষার্থে গাঁ ঢাকা দেন সিরাজুল ইসলাম। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইবি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নববধূকে উদ্ধার করেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইবি থানায় নিয়ে আসেন। এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তার ভাই জগত ডাক্তার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের উপর চাপ প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভণ্ড কবিরাজ সিরাজুল ইসলামের কঠোর শাস্তি দাবি করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েছি এবং ভুক্তভোগী ওই নববধূ বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সত্যতার লক্ষ্যে ওই নববধূকে মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন রিপোর্ট আসলেই ঘটনার সত্যতা জানা যাবে। অভিযুক্ত আসামীকে আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।