তৌকির আহাম্মেদ হাসু, সরিষাবাড়ী প্রতিনিধিঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গত শনিবার (২১ নভেম্বর ২০২০ইং তারিখ) থেকে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১ম পযার্য়ে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় ৫২টি প্রকল্পের অধীনে ১২৯৯২০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ২কোটি ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ১নং সাতপোয়া ইউনিয়নে ৯টি প্রকল্পের অধীনে ১৭৮৮০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে,পোগলদিঘা ইউনিয়ন ৭টি প্রকল্প ২৩৩৬০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ৪৬ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা,ডোয়াইল ইউনিয়ন ৮টি প্রকল্প ১৯২২০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ৩৮লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা,আওনা ইউনিয়ন ৮টি প্রকল্প ১৫৩২০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ৩০লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা,পিংনা ইউনিয়ন ৫টি প্রকল্প ১৪৬৮০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ২৯লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা,ভাটারা ইউনিয়ন ৫টি প্রকল্প ১৪৮৮০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ২৯লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা, কামরাবাদ ইউনিয়ন ৫টি প্রকল্প ৯০০০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ১৮লক্ষ টাকা, মহাদান ইউনিয়ন ৫টি প্রকল্প ১৫৫৬০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ৩১লক্ষ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সরিষাবাড়ী উপজেলার ১নং সাতপোয়া ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের কাজের শুরু থেকেই সিংহভাগ অনিয়ম চলছে। নামমাত্র শ্রমিক খাটিয়ে এবং রাস্তার উঁচু জায়গার মাটি কেটে নিচু জায়গায় দিয়ে প্রকল্পের মাটি কেটে কাজ করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজসে রাস্তা সংস্কার কাজে প্রতিদিন ৪৫/৫২ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও ৮-১০ জন শ্রমিক নিয়ে প্রকল্পের কাজ করিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।আবার অনেক প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি বলেও জানা গেছে। প্রকল্পে স্থানীয় কর্মহীন শ্রমিকদের খাটানোর কথা থাকলেও এতে তা মানা হয়নি। আবার প্রকল্পের কাজ না করেও জব কার্ড প্রস্তুত করেছে প্রকল্পের কর্তা ব্যক্তিরা। এসব কারণে ব্যাহত হচ্ছে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের প্রকৃত উদ্দেশ্য।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১ম পযার্য়ে উপজেলার ১নং সাতপোয়া ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় ৯টি প্রকল্পের অধীনে ১৭৮৮০ জন শ্রমিকের মজুরী বাবদ ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। প্রকল্প ৯টি’র মধ্যে সাতপোয়া ইউনিয়নে বাঘমারা মজিবরের দোকানের পশ্চিম পাশ্বে পাকা রাস্তা হয়ে দক্ষিণ দিকে দুলু সাদুর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার ২০৮০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা।চর সরিষাবাড়ী কাঠের ব্রিজ হতে দক্ষিণ দিকে ত্রাণের ব্রিজ হয়ে নাইমদের বাড়ী হয়ে জলিলের বাড়ীর কাঁচা রাস্তা মেরামত ২২০০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ ৪০ হাজার। চর সরিষাবাড়ী বাদশা ফকির এর বাড়ীর পাকা রাস্তা হতে দক্ষিণ দিকে উম্মতের বাড়ী হয়ে পূর্ব দিকে অলিপাড়া জামে মসজিদের পূর্ব পাশ্বে নদীর পাড় কাঁচা রাস্তা মেরামত ১৭২০ জন শ্রমিক বাবদ ৪৪ হাজার টাকা।চর আদ্রা ফজুর মুসুল্লির বাড়ী হতে দক্ষিণ দিকে সোহানের মোড হয়ে আদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দুলাল সুতারের বাড়ী হয়ে সাক্কুর মন্ডলের বাড়ী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ২০০০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ।পূর্ব ছাতারিয়া মোস্তফার বাড়ীর মোড় পাকা রাস্তা হতে দক্ষিণ দিকে নূরু মন্ডলের বাড়ী হয়ে ইনুছের বাড়ী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ১৮০০ জন শ্রমিক বাবদ ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।উত্তর চুনিয়াপটল কালু ফকির এর বাড়ী মোড় হতে পশ্চিম দিকে মনির উদ্দিনের বাড়ী খেয়াঘাট পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ২২০০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।আর এন সি ঈদগাহ মাঠের দক্ষিণ পাশে সিসি রাস্তা হতে দক্ষিণ দিকে রব্বানির বাড়ী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ১৮০০ জন শ্রমিক বাবদ ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।চর জামিরা বাজার হতে পূর্ব দিকে খালেক মাস্টারের বাড়ী দইপাড় পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ২০০০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ টাকা। নান্দিনা দাখিল মাদ্রাসা মোড় হতে পূর্ব দিকে মোজা উকিলের বাড়ী পর্যন্ত এবং হাছেন মন্ডলের বাড়ী পাকা রাস্তা হতে পূর্ব দিকে দুলালের বাড়ী পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ২০৮০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাতপোয়া ইউনিয়নের চর জামিরা বাজার হতে পূর্ব দিকে খালেক মাস্টারের বাড়ী দইপাড় পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ৫০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত যা ২০০০ জন শ্রমিক বাবদ ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

এ বিষয়ে ১নং সাতপোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের জানান, শ্রমিকের মূল্য ১৫০ টাকা করে বলে আমরা শ্রমিক পাচ্ছি না। তাই যেখানে যে পরিমাণ শ্রমিক থাকার কথা তার অর্ধেক শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। বাকী কাজ শুরু করার জন্য প্রকল্প সভাপতিদের তাগিদ দিয়েছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর সাংবাদিকদের জানান,আমি চেয়ারম্যানদের বলে দিয়েছি শত ভাগ কাজ করার জন্য,তার পরেও আপনারা প্রতিটা প্রকল্প খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন।