
তোফাজ্জল হোসেন বাবু,পাবনা >>
পাবনার ঈশ্বরদীতে ঈদকে সামনে রেখে ঈশ্বরদীর বেনারসি পল্লীতে বেনারসী ও জামদানি বেচাকেনার ধুম পড়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারী ও খুচরা ক্রেতারা এই পল্লীতে এসে ভীড় করছে। শ্রমিকরা দিনরাত ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বেনারসী শাড়ী তৈরীতে।
জানা গেছে, দেশের বেনারসী শাড়ী তৈরীর বড় বাজার ঈশ্বরদীতে। বেনারসী শাড়ী তৈরীতে এখানকার দক্ষ শ্রমিকদের সুনাম অনেক পুরানো।বছরের অন্যান্য সময়ে শ্রমিকরা আলস্যে সময় কাটালেও ঈদের সময় ক্রেতাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এখন বেনারসি পল্লীতে এদিক সেদিক তাকানোর ফুরসত নেই শ্রমিকদের। আগেকার শ্রমিক ছাড়াও কাজের চাপে নতুন শ্রমিকদের নিয়োগ দিচ্ছে মালিকরা। প্রতিদিনই ঢাকা,রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ , টাঙ্গাইল থেকে পাইকাররা বেনারসি ও জামদানি শাড়ী কিনতে ছুটে আসছে ঈশ্বরদীতে। প্রায় ২ হাজার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা দামের বেনারসি শাড়ী এখানে পাওয়া যায়। এখানকার তৈরী ২৫ হাজার টাকা দামের বেনারসি শাড়ী ঢাকার বড় শোরুমে ৫০ হাজার টাকা দামে বিক্রয় হয় বলে জানালেন ঈশ্বরদী বেনারসি পল্লীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মৃত আব্দুল মজিদ বেনারসির ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাভেদ বেনারসি।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে দেশের ঢাকার মিরপুর,রংপুরে বেনারসি শাড়ী তৈরী হলেও ঈশ্বরদী বড় বাজার। এখানে সপ্তাহে অর্ধকোটি টাকার বেনারসি ও জামদানি শাড়ী বিক্রি হয়। এই বেনারসি পল্লীকে কেন্দ্র করে যে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে তাতে সহশ্রাধিক শ্রমিক এখানে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। এখানে একটি সাধারণ শাড়ী তৈরীতে ৩ দিন সময় লাগে। ৩ দিন কাজ করার পর শ্রমিককে মজুরি দেওয়া হয় ১৬,শ থেকে ১৮,শ টাকা।অপরদিকে, দামী শাড়ী তৈরীতে হাতের কাজের প্রয়োজন হয়। সেখানে একটি শাড়ী তৈরীতে ৭ থেকে ৮ দিন সময় প্রয়োজন হয়। সেখানে শ্রমিককে মজুরি দেওয়া হয় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫,শ টাকা। এই মজুরিতে সন্তষ্ট নন শ্রমিকরা।
বেনারসির শ্রমিক সানোয়ার বলেন, সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত কাজ করি। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এতো অল্প পারিশ্রমিকে দিন চলে না। মালিকের কাছে বেতন বাড়ানোর দাবী জানালে মালিক রাগান্বিত হয়ে ওঠে। অন্যত্র চলে যেতে বলে। ঈশ্বরদী শহর থেকে অর্ধকিলোমিটার দূরে ফতেমুহম্মদপুরে এই বেনারসি পল্লী গড়ে উঠেছে। পিছন ফিরে তাকালে দেখা যায় ভারতের বেনারস থেকে ঈশ্বরদীর ফতেমুহম্মদপুরে এই বেনারসি পল্লীর গোড়াপত্তন ঘটান আব্দুল মজিদ বেনারসি। তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেও তার ছেলে জাভেদ বেনারসি বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করার দায়িত্ব নেন।