আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
নীলফামারীর ডোমারের কথিত জ্বীনের বাদশা সাইফুল(২৩) ও তার ২ সহযোগী আবারও র্যাবের হাতে আটক হয়েছে।
রবিবার (৫মে) রাত ১০টার রাজধানীর শ্যামলীতে আকিব ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে ক্যাশ আউট করার সময় তাদের আটক করে র্যাব-২,সিপিসি- ৩। সাইফুল ইসলাম ডোমার উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমবাড়ি গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। তার অপর দুই সহযোগী হলো ডোমার উপজেলার নয়ানী বাগডোকরা আজিজার মিয়ার হাট এলাকার চৌধুরী পাড়া গ্রামের দিলু চৌধুরীর ছেলে মাহফুজুল দ্বীপ চৌধুরী (২৬) ও আমবাড়ী গ্রামের রাকিব (২৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু সিম ও ৭টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, কখনো অনুনয় বিনয়, আবার কখনো গায়েবী আওয়াজের মতো গম্ভীর কণ্ঠে কথা বলে, সহজ সরল বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত কথিত জ্বীনের বাদশা সাইফুল। কাউকে বন্ধু পরিচয়ে, কারো ফেসবুক আইডি হ্যাক করে, আবার কাউকে মা-বাবা মারা যাওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা পাঠাতে বলতো সে। দেখানো হতো দান করা টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার প্রলোভনও। এরই ধারাবাহিতায় ফাঁদ পাতে র্যাবের অভিযানিক দল। পরে রাত ১০টার দিকে হাতে নাতে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম ও টাকা জব্দ করা হয়। নীলফামারির ডোমারে বাড়ি হলেও সারাদেশে সিম পরিবর্তন করে প্রতারণা চালাতো সাইফুল। ধরা পড়ার পর আট মামলার আসামি সাইফুল প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে।
কথিত জ্বীনের বাদশা সাইফুল বলেন, ‘টাকা নিয়েছি অনেকবার কিন্তু হিসেব নেই। তার এক বন্ধু মাহফুজুল দ্বীপ চৌধুরী মোবাইল ব্যাকিংয়ে চাকরির সুবাদে নতুন নতুন সিম সাইফুলকে সরবরাহ করে সহযোগিতা করতো। লোকজনের পাঠানো টাকা বিকাশের মাধ্যমে আসতো রাকিবের নম্বরে। রাকিব প্রতি লেনদেনের জন্য পেত ২ হাজার টাকা করে।
কথিত জ্বীনের বাদশা সাইফুলের সহকারী মাহফুজুল দ্বীপ চৌধুরী বলেন, ‘আমি রকেটে কাজ করতাম, বিভিন্ন সময়ে জ্বীনের বাদশাকে সহযোগিতা করতাম।
র্যাব-২ এর এসপি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের নিয়ে গোয়েন্দা অনুসন্ধান চালানো হয়। তারা নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমানের ছেলের ফেসবুক হ্যাকিং করে হুমকি দেয় ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। শেরে-ই-বাংলা থানায় প্রতারণার একটি জিডি করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ফাঁদ পেতে কৌশলে তাদের আটক করা হয়। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, কথিত জ্বীনের বাদশার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ৮টি মামলা রয়েছে। তিনি জানান, আটক ৩ জনের সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।